অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : প্রথমবারের মতো ড্রোন থেকে মিসাইল নিক্ষেপ করে ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান। গত দু’দিন ধরে অনুষ্ঠিত মহড়ায় আকাশপথে যুদ্ধের নানা কৌশল প্রদর্শন করা হয় এবং সেখানেই ড্রোন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আরেকটি ড্রোনকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়।
এর মাধ্যমে এবারই প্রথম ইরানে ড্রোন থেকে হামলা চালিয়ে অন্য একটি ড্রোন ধ্বংস করা হলো। বুধবার (৪ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ইরানের সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল প্রেস টিভি।
ইরানের সেনাবাহিনীর এয়ার ডিফেন্স ফোর্সের কমান্ডার বলেছেন, নিজের দেশে তৈরি ইরানের একটি ড্রোন সফলভাবে প্রথমবারের মতো আকাশ যুদ্ধের মিশন পরিচালনা করেছে। এতে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে অন্য একটি ড্রোনকে হামলা ও ধ্বংস করা হয়।
বুধবার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলিরেজা সাবাহি-ফার্ড বলেছেন, ‘আকাশযুদ্ধের মহড়ার সময় একটি ড্রোন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আরেকটি ড্রোনকে লক্ষ্যবস্তু করে। এটি দেশে প্রথমবারের মতো করা হয়েছে এবং আমরা লক্ষ্যবস্তুকৃত ড্রোনটিকে ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছি।’
তার দাবি, বিশ্বে আর মাত্র দুটি দেশ এই অত্যাধুনিক ও অত্যন্ত জটিল অভিযান পরিচালনা করার সক্ষমতা রাখে। ইরানের সীমান্তবর্তী সাতটি প্রদেশে বিশাল এলাকাজুড়ে অনুষ্ঠিত এ মহড়ায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চারটি ডিভিশন অংশ নেয়।
এদিকে দুইদিন ধরে চলা এই মহড়ায় নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি কামিকাজে ও যুদ্ধ ড্রোনগুলো সফলভাবে সকল লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইরানের সেনাবাহিনীর যৌথ মহড়ার মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলীরেজা শেইখ।
বুধবার তিনি বলেন, মহড়ায় রাডার-বিধ্বংসী ‘ওমিদ’ ড্রোন নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করে তাতে হামলা চালাতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া ‘অরাশ’ কামিকাজে ড্রোন সফলভাবে ভূমি ও সাগরে থাকা লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করেছে। মহড়ায় ইরানের ড্রোনগুলো স্মার্ট বোমা ব্যবহার করেছে বলেও জানান এই জেনারেল।
তিনি দাবি করেন, ‘মহড়ায় কামিকাজে ও যুদ্ধ ড্রোনগুলো স্মার্ট বোমা দিয়ে পূর্ব নির্ধারিত সকল লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে।’
এদিকে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি বলেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় সজ্জিত ইরানি ড্রোন কয়েক হাজার মাইল দূরের নৌ লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করে তাতে আঘাত হানতে সক্ষম।
বুধবার রাজধানী তেহরানে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের এক সম্মেলনে জেনারেল সালামি বলেন, কয়েক হাজার মাইল দূরের সাগর দিয়ে চলমান জাহাজের যেকোনও অংশে আঘাত হানার মতো ড্রোন আমরা তৈরি করেছি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংযোজন করে ইরানি ড্রোনগুলোর এই কার্যক্ষমতা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ইরান তার প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে এবং সামরিক হামলার সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে তৈরি ইউএভি-এর (ড্রোন) বহর আরও প্রসারিত করেছে।
এছাড়া ইরানের সেনাবাহিনীর বিভিন্ন বিভাগ এখন বিভিন্ন সামরিক অভিযানের জন্য ইরানের প্রতিরক্ষা শিল্পের নির্মিত ড্রোন ব্যবহার করছে।
Leave a Reply